মো. দেলোয়ার হোসেন। তিনি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি এলাকার বাঁশতৈল ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। স্নাতক পাসের পর তিনি বন্ধুদের সাথে ঢাকায় বায়িং হাউসে কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি গড়ে তোলেন ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সালে দুই ব্যবসায় তাকে লোকসানের মুখে হয়।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এবং বিদেশ ভ্রমণে গিয়ে ফলের বাগান দেখে তিনি ফল চাষে আগ্রহী হন। পরে গ্রামের বাড়ি ফিরে নিজেদের জমিতে পেয়ারা গাছ লাগিয়ে ফলের বাগান শুরু করেন। তারপর আর তার পেছনে ফিরতে হয়নি। বর্তমানে মাল্টা চাষে পেয়েছেন সাফল্য। স্বপ্ন এখন তার হাতের মুঠোয়। নিরন্তর চেষ্টা, পরিশ্রম ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে আরও বড় সাফল্যের পেছনে ছুটে চলেছেন তরুণ উদ্যোক্তা দেলোয়ার।
২০১৫ সালে ১০০ পেয়ারা গাছের চারা দিয়ে ফলের বাগান শুরু করেন দেলোয়ার। ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাগানে প্রথম ৮৫টি মাল্টাগাছ লাগান। বর্তমানে তার বাগানে ১ হাজার ১০০টি গাছে মাল্টা ধরেছে।
![](https://news100.xyz/wp-content/uploads/2021/09/al-1-20210909153206.jpg)
চলতি মৌসুমে শুধু মাল্টাই সাত লাখ টাকায় বিক্রি করার আশা করছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, সাত লাখ টাকায় মাল্টা বিক্রি হলে সব খরচ বাদে লাভ থাকবে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা। এ ছাড়া বাগানের অন্যান্য ফল বিক্রি করেও বেশ মুনাফা পাবে। আগামী বছর উৎপাদন খরচ কমে যাবে, কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে তখন আরও বেশি লাভ হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে তিনি জানান।
দেলোয়ার পর্যায়ক্রমে বাগানের জমির আয়তন ও বিভিন্ন ধরনের ফলগাছের সংখ্যা বাড়াতে থাকেন। বর্তমানে প্রায় ৬০০ শতাংশ জমিতে ৪ হাজার পেয়ারা, ১১০০ মাল্টা, ৬০০ লেবু, ৩০০ কলা, ৩৫০ পেঁপে, বারোমাসি ২৬০ আম, দার্জিলিংয়ের কমলা ৮৫, চায়না কমলা ৬৪, বারোমাসি আমড়া ৪০, লটকন ৩০, কতবেল ২৫, জাম্বুরা ২০, কাশ্মিরিকুল ও বনসুন্দুরী ১৪০টি, ডালিম ৮, চেরি ফল ৬, বাউকুল ও আপেলকুল বরই ও রামবুটানগাছ ৪টি। এসব গাছে বেশ ফলও ধরেছে। এরই মধ্যে তিনি পেয়ারা, বারোমাসি আমড়া, আম ও পেঁপে বিক্রি শুরু করেছেন।
পাঁচগাঁও গ্রামে সরেজমিনে দেখা যায়, বাগানের প্রতিটি গাছেই সবুজ রঙের মাল্টা ঝুলছে। মাল্টাগুলো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে কিনে নিচ্ছেন ক্রেতা ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া আকার ভেদে প্রতি পিস পেঁপে ৩০ থেকে ৭০ টাকা, প্রতি মণ পেয়ারা ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা এবং ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ আমড়া বিক্রি হচ্ছে।